রং ফর্সাকারী ক্রিম কিনছেন নাকি ক্যান্সার কিনছেন?

রং ফর্সাকারী ক্রিম কিনছেন নাকি ক্যান্সার কিনছেন? বর্তমানে তরুণ তরুণীরা তাদের রূপচর্চার ব্যাপারে সবচেয়ে বেশী সচেতন। আর নিজেদের চেহারা সুন্দর করতে যথাসাধ্য সবকিছু করেন তারা। বিখ্যাত সব কোম্পানির রং ফর্সাকারী ক্রিমের ব্যবহারের পেছনে তাদের ব্যয় হয় অনেক টাকা। কিন্তু কোন ক্রিম মেখে তাদের চেহারা এত সুন্দর হচ্ছে তা থাকে অজানা। আর কিসের কারণে চেহারা এত সাদা হয় তা কি ভেবেছেন কখনো?

বেশিরভাগ সময় টেলিভিশনে রং ফর্সাকারী ক্রিমের চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে নিজে ব্যবহার করতে শুরু করেন সেসব ক্রিম। কিন্তু রং ফর্সাকারী ক্রিম কেনার আগে একবার ভাবুন কী কিনছেন? রং ফর্সাকারী ক্রিম নাকি ত্বকের ক্যান্সার!

হ্যাঁ, গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ রং ফর্সাকারী পণ্যে মারকিউরাস কোরাইডের (পারদযৌগ) মতো অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস ব্যবহার করা হয়, যা ত্বকের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

সম্প্রতি ভারতের সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের (সিএসই) পলিউশন মনিটরিং ল্যাবে পরীক্ষা করা সবকটি ফেয়ারনেস ক্রিমেই পারদ পাওয়া গেছে ৪৪ শতাংশেরও বেশি।

প্রাথমিকভাবে এইসব ফেয়ারনেস ক্রিম ব্যবহারের ফলে সাময়িকভাবে ত্বকের রং কিছুটা ফর্সা হলেও দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি মোটামুটি নিশ্চিত। ত্বকের জন্য ক্ষতিকর এই সকল রং ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহারকারীরা ভাবতে পারেন এই ক্রিম ব্যবহারের ফলে তাদের ত্বকের রঙে পরিবর্তন এসেছে। আগের চেয়ে একটু ফর্সা দেখা যাচ্ছে। আসলে তাদের ত্বক ফর্সা নয় ফ্যাকাসে দেখা যাচ্ছে।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রায় সব ফর্সা হওয়ার ক্রিমেই মেশানো থাকে পারদ। যার থেকে ত্বকের অ্যালার্জি, র‌্যাশ, এমনকি প্রাণঘাতী ক্যান্সারও হতে পারে।

অধিকাংশ রঙ ফর্সাকারী পণ্যে মারকিউরাস ক্লোরাইডের মতো অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস ব্যবহার করা হয়, যা ত্বকের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। মারকিউরাস ক্লোরাইড মূলত ব্লিচের কাজ করে, আর এটাই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এ ধরনের ক্রিম নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক পাতলা হয়ে যায় ও টানটান ভাব হারায়। এতে ব্রণও সৃষ্টি হয়।

এছাড়াও ফেয়ারনেস ক্রিম ত্বককে ফটোসেনসেটিভ বা আলোক সংবেদনশীল করে তোলে। তাই এ ধরনের ত্বকে সূর্যের রশ্মি তুলনামূলক বেশি প্রভাব ফেলে এবং গুটি ও চুলকানি তৈরি হয়।

এছাড়া অনেক সংবেদনশীল ত্বকে অয়েল প্যাক, ফেশিয়াল কিংবা ম্যাসাজ করলেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

ফর্সা হওয়ার ক্রিম কিংবা লোশনে অতিরিক্ত পর্যায়ে মেশানো হচ্ছে স্টেরয়েড। আর তা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। যার ফলে ত্বক উজ্জল করতে চর্মরোগের শিকার হচ্ছেন বহু নারীই।

এখন ভাবার বিষয় হচ্ছে আপনি আপনার নিজের আসল ত্বক নিয়ে খুশি থাকবেন নাকি এসব ক্ষতিকর জিনিসের ব্যবহারে মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনবেন।

তবে আপনি আপনার ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক নানা উপাদান ব্যবহার করতে পারেন যেগুলো আপনার ত্বকের পুষ্টি জুগিয়ে ত্বককে করবে আরও সুন্দর।